বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:৩৬ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম
গাইবান্ধা সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে পুরস্কার বিতরণ গাইবান্ধা পৌরসভার নগর মাতৃসদন কেন্দ্রের ভার্চুয়াল উদ্বোধন সুন্দরগঞ্জ সরকারি কলেজে ওরিয়েন্টেশন ক্লাসের উদ্বোধন সাঘাটায় অবৈধ বালু উত্তোলন : প্রশাসনের অভিযানে ব্যবসায়ীর ৫ লাখ টাকা জরিমানা গোবিন্দগঞ্জে (অব.) সশস্ত্র বাহিনী ঐক্য পরিষদের মতবিনিময় ফুলছড়িতে কিন্ডারগার্টেনে সহপাঠীদের হাতে শিক্ষার্থী নিগ্রহের অভিযোগ ঘাঘট নদীতে শিক্ষিকার লাশ উদ্ধার সাদুল্লাপুরে বেগুন ক্ষেতে মোজাইক ভাইরাস: দুশ্চিন্তায় কৃষক কামারপাড়া কলেজে একাদশ শ্রেণির ওরিয়েন্টেশন ক্লাস গাইবান্ধা সরকারি কলেজে শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টশন ক্লাস

সাদুল্লাপুরে আলু বীজ না পেয়ে ভুট্টার আবাদ

সাদুল্লাপুরে আলু বীজ না পেয়ে ভুট্টার আবাদ

স্টাফ রিপোর্টারঃ সাদুল্লাপুরের ঘাঘট নদীর তীরবর্তী গ্রাম হিয়ালি। এ গ্রামের বাসিন্দা সাদা মিয়া ১২ শতাংশ জমিতে আলু রোপণ করতে চেয়েছিলেন। হাল-চাষ দিয়ে জমি প্রস্তুত করে বীজ কিনতেও যান বাজারে। তবে কয়েকদিন ঘুরেও পাননি। পরে ভুট্টা বীজ রোপণ করেছেন। সাদা মিয়ার ভাষ্য, উচ্চদামে কিনতে চেয়েও তিনি বীজ সংগ্রহ করতে পারেননি। রোপণ মৌসুমে সরকারিভাবে বীজ আলু সরবরাহের ব্যবস্থা থাকলে কৃষকদের সুবিধা হয়। তখন সিন্ডিকেট ভেঙে যেত, বছর জুড়ে নাগালের মধ্যে থাকত দাম।
শুধু সাদা মিয়া নন, চলতি মৌসুমে বিএডিসি ও কোম্পানির বীজ আলু চাহিদামতো পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন এলাকার অনেক কৃষক। তারা বলছেন, ভালো ফলন হওয়ায় স্টারিক্স (স্টিক), লাল ও সাদা পাকড়ি, ডায়মন্ড ও বার্মা জাতের বীজের চাহিদা বেশি। শহরের সুজন বীজ ভান্ডারের মালিক সুজন কুমার সরকার বলেন, তিনি একটি সংস্থা থেকে অল্প পরিমাণ বীজ সংগ্রহ করেছিলেন। সেগুলো বিক্রি করেছেন ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজি। এর চেয়েও বেশি দামে বীজ কিনতে চাচ্ছেন কৃষক। কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে অনেকে ফিরে যাচ্ছেন।
পছন্দের বীজ আলু না পেয়ে ভুট্টার আবাদ করেছেন কাজীবাড়ী সন্তোলা গ্রামের কৃষক খলিলুর রহমান। তাঁর ভাষ্য, এবার বীজের দাম বেশি। সময়মতো সার পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে চলতি মৌসুমে প্রায় এক বিঘা জমিতে আলুর বদলে ভুট্টার আবাদ করেছেন। জানা গেছে, উপজেলায় এবার ১ হাজার ২১০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে কৃষি বিভাগ। তবে আলুর আবাদ কমলে এ ফসলের আবাদ বাড়বে। এর সঠিক হিসাব এখনই বলা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
কৃষি বিভাগ থেকে জানা গেছে, গাইবান্ধা জেলায় বেশি আলু উৎপাদন হয় সাদুল্লাপুরে। চলতি মৌসুমে ২ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এ জন্য প্রয়োজন প্রায় ৪ হাজার ১২০ টন বীজ। বিগত দুই মৌসুমে ভালো ফলনের সঙ্গে সঠিক দাম পাওয়ায় এবার ৭ হাজার কৃষক এ ফসল আবাদের প্রস্তুতি নিয়েছেন। যারা আগাম বীজ পেয়েছেন, তারা রোপণ করেছেন। আলু তুলে রোপণ করা যাবে বোরোর চারা। চলতি ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত রোপণ করা যাবে আলু বীজ।
কিছু ফসল আবাদে কৃষকদের প্রণোদনা দেওয়া হয় বিনামূল্যে বীজ, সার ও কীটনাশক। প্রশিক্ষণ ও প্রদর্শনীর ব্যবস্থা থাকে। তবে আলুচাষিদের জন্য এ সুযোগ নেই বলে জানান অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম বসুনিয়া। কৃষকদের বাইরে থেকে কিনতে হয় বীজ-সার ও কীটনাশক। তিনি বলেন, কৃষকের জন্য প্রণোদনার ব্যবস্থা করলে উৎপাদন বাড়ত। এতে বাজারে পর্যাপ্ত আলু সরবরাহ থাকত। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
সূত্র জানায়, আলু আবাদের জন্য সাদুল্লাপুরে ৩০০ টন ইউরিয়া, এমওপি ৬২০, ডিএপি ৩০০ ও টিএসপি সার প্রয়োজন হয় ৩৫০ টন। কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সরকার নির্ধারিত দাম অনুযায়ী ইউরিয়া বিক্রি হবে ২৭ টাকা কেজি; তবে বিক্রি হচ্ছে ২৮ টাকায়। এমওপি ২০ টাকার স্থলে ২৫, ডিএপি ২১ টাকার স্থলে ২৫ আর টিএসপি ২৭ টাকার পরিবর্তে বিক্রি হচ্ছে ৩৮ থেকে ৪০ টাকায়।
সাদুল্লাপুর বাজারের বিক্রেতা বেলাল হোসেন বলেন, চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত সার পাওয়া যাচ্ছে না। টিএসপির সরবরাহ কম। ডিলাররা টিএসপির দাম ধরেছেন ১ হাজার ৭৫০ টাকা বস্তা। এতে প্রতি কেজির দাম পড়বে ৩৫ টাকা। সঙ্গে লভ্যাংশ ধরে বিক্রি করতে হবে। তাতে প্রতি কেজি ৩৮ থেকে ৪০ টাকার কমে বিক্রি করলে লোকসান হবে। সরকারি দামের সঙ্গে বাজারে দামের অনেক ফারাক।

 

নিউজটি শেয়ান করুন

© All Rights Reserved © 2019
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com